স্টিল দেয়ার ইজ হোপ


ভূমিকম্প এবং যুদ্ধগ্রস্ত ছোট্ট, সুন্দর দ্বীপ সেফালোনিয়া, সেখানকার একমাত্র ডাক্তার এবং তার কন্যা পেলাগিয়া--এদের ঘিরেই সাদামাটা কাহিনীর সিনেমা "ক্যাপ্টেন করেলি'স ম্যান্ডোলিন"। কিন্তু অন্তত একটা দৃশ্যের চিত্রায়ন আর একটা চিঠির কারণে সাদামাটা এই মুভিটা আর সাদামাটা থাকে নি, অন্তত আমার কাছে।

পেলাগিয়া প্রথম যৌবনে প্রেমে পড়েছিলো প্রতিবেশী মান্দ্রাজের। তারপর যুদ্ধকালীন সময়ে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া দূরত্বের সময়ে সে বুঝতে পারে মান্দ্রাজের প্রতি তার ভালোবাসার আসলে ততটা জোর নেই যতটা হলে তাকে ভালোবাসা নাম দিয়ে সীমাহীন সময় অপেক্ষা করা যায়। সময় যায়, আবার তার জীবনের চরম প্রতিকূল মুহুর্তে প্রেম আসে-- ক্যাপ্টেন করেলি--মার্চপাস্টের সময়েও যার পিঠের ঝোলায় দুলতে থাকে তার প্রিয় ম্যান্ডোলিন। কিন্তু অপেক্ষা--পেলাগিয়ার নিয়তির সাথে বুঝি একসুরে বাঁধা। আবার দূরত্ব এসে দাঁড়ায় পেলাগিয়া আর ক্যাপ্টেন করেলি'র মাঝে। জীবন চলতে থাকে জীবনের নিয়মে, বৃদ্ধ ডাক্তার বাবা, যুদ্ধে এতিম পাশের বাড়ির ছোট্ট মেয়ে আর বাবার হাসপাতালে মানুষের সেবা--এই নিয়েই বেঁচে থাকে পেলাগিয়া।হঠাৎ একদিন-- একটা মাত্র পার্সেল আবার গতি এনে দেয় পেলাগিয়ার ছন্দহীন জীবনে--ক্যাপ্টেন করেলি'র বাজানো ম্যান্ডোলিনের সুরের রেকর্ড।

ঠিক সেই সময়ে ক্যাপ্টেন করেলিকে পেলাগিয়ার বাবার লিখা চিঠি এবং তার পরবর্তি দৃশ্য আমাকে এত বেশি নাড়া যে কেন দিলো..!

"Antonio, I don't know wheather this letter will reach you or even if you are alive. Perhaps someone else sent us your record. And that is why we found the note. I would like to say that Pelagia is happy but she is full of tears she will not let fall, and over grief no doctor can mend. She blames herself for the pain we have suffered and perhaps same is true for you.

You know I am not a religious man. But i believe this if there is a wound, we must try to heal it. If there is someone who's pain we can cure, we must search till we find them. If the Gods have choosen that we should survive, it will be for a reason..."

চিঠিটার এই শেষ লাইন লেখার মুহুর্তে প্রচন্ড ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয় তাদের বাড়ি, চেম্বার, হাসপাতাল। হাসপাতাল থেকে দৌড়ে এসে পেলাগিয়া নিজেদের বাড়ির ধ্বংসস্তুপের ওপর বসে থাকা তার বাবাকে খুঁজে পায়। চিঠি এবং তার পরের মুহুর্তেই দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকার ভীষণ স্পর্শকাতর এই দৃশ্য-- আমার মনে হয়েছিলো প্রচন্ড হতাশাকে অগ্রাহ্য করে বেঁচে থাকার গোপন অথচ চিরকালীন মানব-মন্ত্রের একটা অসাধারণ সার্থক চিত্রায়ন।

এই রকম একটা দৃশ্য দেখলে গভীর স্বস্তির একটা নিশ্বাসের সাথে বুক থেকে বেরিয়ে আসে একটা বিশ্বাস-- " Still there is hope".

Comments

দাশু said…
চমৎকার।

কেউ নতুন করে শুরু করলে নিজের লেখার ইচ্ছেটা উঁকি দেয়। ঈদের শুভেচ্ছা তারেক এবং তিথি'কে।
ধন্যবাদ হযু ভাই।

আপনি কেন আর নিয়মিত লিখেন না? অনেক ব্যস্ত? ভীষন রকমের মিস করি আপনার লেখা, বিশেষ করে কবিতা।

Popular posts from this blog

হাত বান্দিবো পাও বান্দিবো | শাহ আবদুল করিম

নজমুল আলবাবের " পাতা ঝরার আগের গল্প" - আমার পাঠ প্রতিক্রিয়া বা স্মৃতির চর্বণ

ক্যাফের শহর মেলবোর্ন