আজ শুধু নতুন
এরকম ধুরুম ধারুম করে যে কেমন একটা বছরই চলে গেলো টের পেলাম এই ৩১ ডিসেম্বরে এসে! ভাগ্যিস, এমন করেই কেটেছে। আজ নতুন বছর ২০০৯-এর প্রথম একটা দিন পার করে ভাবছি, কেমন কাটতে পারে এই বছরটা? নতুন বছরের রেজ্যুলেশন বলতে যদি এবার কিছু থেকে থাকে, তার শুরুতেই আছে...আর কি? দেশে যেতে চাই। শুধু চাই বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলা নয়, এবার সম্ভাবনার শতকরাও বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। তাই কেবল অপেক্ষা সেটা সত্যি হবার, আর প্রার্থনা।
আজ একটা মজার কথা মনে হলো, ছোটবেলার অনেক কুসংস্কারের মধ্যে এটা একটা। নতুন বছরের প্রথম দিনটা নাকি সারা বছরের একটা সারাংশ। সুতরাং এই দিনটায় সব ভালো ভালো কিছু করার চেষ্টা করতে হবে, নইলে বছরের বাকি দিনগুলোও যে তেমনই যাবে! সেই বিশ্বাসটা এখন আর নেই ছোটবেলার মত, কিন্তু একটু হলেও মনের মধ্যে উঁকি দেয়, খানিক হাসিমিশ্রিত হলেও। আজ অনেক চেষ্টা করেও মনে করতে পারলাম না গত বছরের ১ জানুয়ারী আমি কি কি করেছিলাম! তাই দুম করেই ঠিক করলাম, আজ কি কি করেছি তা লিখে রাখব যেন বছর শেষে মেলাতে পারি।
আজ দিনের শুরু যদি দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ধরি তাহলে প্রথম যে কাজটা করেছিলাম তা হলো, অত রাতে হঠাৎ করে নুডুলস রাঁধতে শুরু করেছিলাম! দেশে ফোন করে কথা বলেছি বেশ খানিকক্ষন। তারপর খানিক মুভি দেখেছি। কোন এক ফাঁকে নেট থেকে বেশ কিছু নাটক আর অন্য অনুষ্ঠান ডাউনলোড করেছি। ইপ্রথমআলোর সাইটে ঢুঁ মেরেছি। এরপর ছোটআপুর সাথে চ্যাট করা শুরু করে শেষ করেছি রাত (নাকি ভোর?) সাড়ে ৪টায়। তক্ষুনি ফজরের আজান শুনে (কম্পিউটারে, সফটওয়্যার আর কি) নামাজ পড়ে নিলাম। এইটা একটা ভালো ব্যাপার, প্রথম দিনটায় প্রথম নামাজটা পড়েছি। তারপরে ৫টায় ঘুমুতে গেলাম। সারারাত জেগে যা হলো আর কি, ঘুম ভাঙলো অর্ধেক দিন পার করে, দুপুর ১:৪৭-এ। ফ্রেশ হয়ে যথারীতি সকালের নাস্তা তো করাই হলো না, এবং লাঞ্চও নয়। আমি বরং পরের বেলার জন্য সবজি রাঁধলাম। ঘুম ভেঙেই এসএমএস পেয়েছিলাম, আজ ভারী খাবার না খেয়ে রুটি-সবজি খাবার বাসনা পোষন করেছেন তিনি (এইটা একটা বেশ ভালো রকম রেভ্যুলেশন বলা যেতে পারে)। তো সবজি রাঁধা শেষ হতে হতেই মনে হতে লাগলো, বছরের প্রথম দিনে মা বাসায় কত কি রাঁধতেন। আমার কি সেই ট্র্যাডিশন রাখা উচিত নয়? মনে মনে রুটির প্ল্যান বাদ দিয়ে অন্য কিছুর নকশা করা হয়ে গেলো। সে ফেরার পরই বলতেই রাজি হয়ে গেলো ডায়েটিং প্ল্যান বাতিল করতে (হবে না আবার :-)? )
তারপরে একটু ঘুরতে বেরুনো হলো, টুকিটাকি বাজার। আবার ঘুরঘুর। যেটা মজা হলো, হুট করেই ড্রাইভিং শেখানোর একটা চেষ্টা করা হলো আমাকে। ড্রাইভিং-এ আমার খুব ইন্টারেস্ট আছে, আমি বহুবার স্বপ্নে দেখেছি যে গাড়ি চালাচ্ছি। নানান ধরনের এক্সাইটিং স্বপ্ন। কখনও স্বাভাবিকভাবে চালাই, কখনও বা কোন ভীষন ক্রাইসিস মুহুর্তে কাউকে উদ্ধার করতে হাতে নিই গাড়ির স্টিয়ারিং হুইল। নানান দুর্গম পথ পাড়ি দিই অনভিজ্ঞ হাতে দারুন দক্ষতায়। কিন্তু সেই আমাকেই যখন তারু হাতে-কলমে শেখাতে চায়, আমি নানা গাঁইগুই শুরু করি। ভয় লাগে, পারব না...ইত্যাদি ইত্যাদি। আজও তাই করতেই সে বেশ ভাব নিয়ে প্রায় অর্ডার করে বললো, আজ এসব বলিস না, এটা নতুন বছরের নতুন একটা চেষ্টা। কমান্ড পেয়ে আমি বেশ সুবোধ বালিকার মত চট করেই রাজি হয়ে গেলাম। এটা দ্বিতীয় দিন আমার সত্যি গাড়ি চালানোর। মন্দ করিনি, তারু বলেছে। আমারও বেশ লাগলো। কিন্তু একসাথে এত কিছু কেন করতে হয় এটাই রাগ লাগছিলো। রাইটে দেখো, লেফটে দেখো, সামনে-পেছনে, একই পা দিতে ব্রেক এবং এক্সেলেটর, সিগনাল দাও...কত কি রে বাবা! ওইটুকু আঁকাবাকা রাস্তায় বারবার চক্কর দিতে আমার বেশ লাগছিলো, কিন্তু বড় রাস্তায় কেমনে কি! যা বুঝলাম, রাস্তায় যদি আর কোন গাড়ি না থাকে তো আমি ব্রেক চেপে বেশ ভালোই চলতে পারবো!
এরপর গান শুনতে শুনতে এবং গাইতে গাইতে বাড়ি ফিরে দুমদাম করে ভুনা খিচূড়ী, আলু চপ আর গরুর মাংস রন্ধন। অতঃপর সবজি এবং শশা-টমেটো-গাজর-পেঁয়াজ-সরিষা তেলের সালাদের সাথে ভক্ষন। বেশ খানিকক্ষন আড্ডা। আর তারপর এই এখন লিখছি খানিক খেরোখাতায়।
উফফ। মনে হচ্ছে নিজের সাথে বকর বকর করেই যাচ্ছি অনেকক্ষন ধরে। তবু তো ধরে রাখা হলো আজকের দিনটা। রাতটা বাকি আছে এখনও। সেইটুকু থাকুক নিজের কাছেই।
কেউ যদি পড়ে থাকে এই সাধারণ দিনলিপি তাকে জানাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা। ভালো কাটুক, ভালো থাকুক সবাই। ভালো থাকুক আমাদের সোনার দেশটা, নতুন সম্ভাবনাকে সংগী করে বাস্তব সাফল্যের পথে।
আজ একটা মজার কথা মনে হলো, ছোটবেলার অনেক কুসংস্কারের মধ্যে এটা একটা। নতুন বছরের প্রথম দিনটা নাকি সারা বছরের একটা সারাংশ। সুতরাং এই দিনটায় সব ভালো ভালো কিছু করার চেষ্টা করতে হবে, নইলে বছরের বাকি দিনগুলোও যে তেমনই যাবে! সেই বিশ্বাসটা এখন আর নেই ছোটবেলার মত, কিন্তু একটু হলেও মনের মধ্যে উঁকি দেয়, খানিক হাসিমিশ্রিত হলেও। আজ অনেক চেষ্টা করেও মনে করতে পারলাম না গত বছরের ১ জানুয়ারী আমি কি কি করেছিলাম! তাই দুম করেই ঠিক করলাম, আজ কি কি করেছি তা লিখে রাখব যেন বছর শেষে মেলাতে পারি।
আজ দিনের শুরু যদি দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে ধরি তাহলে প্রথম যে কাজটা করেছিলাম তা হলো, অত রাতে হঠাৎ করে নুডুলস রাঁধতে শুরু করেছিলাম! দেশে ফোন করে কথা বলেছি বেশ খানিকক্ষন। তারপর খানিক মুভি দেখেছি। কোন এক ফাঁকে নেট থেকে বেশ কিছু নাটক আর অন্য অনুষ্ঠান ডাউনলোড করেছি। ইপ্রথমআলোর সাইটে ঢুঁ মেরেছি। এরপর ছোটআপুর সাথে চ্যাট করা শুরু করে শেষ করেছি রাত (নাকি ভোর?) সাড়ে ৪টায়। তক্ষুনি ফজরের আজান শুনে (কম্পিউটারে, সফটওয়্যার আর কি) নামাজ পড়ে নিলাম। এইটা একটা ভালো ব্যাপার, প্রথম দিনটায় প্রথম নামাজটা পড়েছি। তারপরে ৫টায় ঘুমুতে গেলাম। সারারাত জেগে যা হলো আর কি, ঘুম ভাঙলো অর্ধেক দিন পার করে, দুপুর ১:৪৭-এ। ফ্রেশ হয়ে যথারীতি সকালের নাস্তা তো করাই হলো না, এবং লাঞ্চও নয়। আমি বরং পরের বেলার জন্য সবজি রাঁধলাম। ঘুম ভেঙেই এসএমএস পেয়েছিলাম, আজ ভারী খাবার না খেয়ে রুটি-সবজি খাবার বাসনা পোষন করেছেন তিনি (এইটা একটা বেশ ভালো রকম রেভ্যুলেশন বলা যেতে পারে)। তো সবজি রাঁধা শেষ হতে হতেই মনে হতে লাগলো, বছরের প্রথম দিনে মা বাসায় কত কি রাঁধতেন। আমার কি সেই ট্র্যাডিশন রাখা উচিত নয়? মনে মনে রুটির প্ল্যান বাদ দিয়ে অন্য কিছুর নকশা করা হয়ে গেলো। সে ফেরার পরই বলতেই রাজি হয়ে গেলো ডায়েটিং প্ল্যান বাতিল করতে (হবে না আবার :-)? )
তারপরে একটু ঘুরতে বেরুনো হলো, টুকিটাকি বাজার। আবার ঘুরঘুর। যেটা মজা হলো, হুট করেই ড্রাইভিং শেখানোর একটা চেষ্টা করা হলো আমাকে। ড্রাইভিং-এ আমার খুব ইন্টারেস্ট আছে, আমি বহুবার স্বপ্নে দেখেছি যে গাড়ি চালাচ্ছি। নানান ধরনের এক্সাইটিং স্বপ্ন। কখনও স্বাভাবিকভাবে চালাই, কখনও বা কোন ভীষন ক্রাইসিস মুহুর্তে কাউকে উদ্ধার করতে হাতে নিই গাড়ির স্টিয়ারিং হুইল। নানান দুর্গম পথ পাড়ি দিই অনভিজ্ঞ হাতে দারুন দক্ষতায়। কিন্তু সেই আমাকেই যখন তারু হাতে-কলমে শেখাতে চায়, আমি নানা গাঁইগুই শুরু করি। ভয় লাগে, পারব না...ইত্যাদি ইত্যাদি। আজও তাই করতেই সে বেশ ভাব নিয়ে প্রায় অর্ডার করে বললো, আজ এসব বলিস না, এটা নতুন বছরের নতুন একটা চেষ্টা। কমান্ড পেয়ে আমি বেশ সুবোধ বালিকার মত চট করেই রাজি হয়ে গেলাম। এটা দ্বিতীয় দিন আমার সত্যি গাড়ি চালানোর। মন্দ করিনি, তারু বলেছে। আমারও বেশ লাগলো। কিন্তু একসাথে এত কিছু কেন করতে হয় এটাই রাগ লাগছিলো। রাইটে দেখো, লেফটে দেখো, সামনে-পেছনে, একই পা দিতে ব্রেক এবং এক্সেলেটর, সিগনাল দাও...কত কি রে বাবা! ওইটুকু আঁকাবাকা রাস্তায় বারবার চক্কর দিতে আমার বেশ লাগছিলো, কিন্তু বড় রাস্তায় কেমনে কি! যা বুঝলাম, রাস্তায় যদি আর কোন গাড়ি না থাকে তো আমি ব্রেক চেপে বেশ ভালোই চলতে পারবো!
এরপর গান শুনতে শুনতে এবং গাইতে গাইতে বাড়ি ফিরে দুমদাম করে ভুনা খিচূড়ী, আলু চপ আর গরুর মাংস রন্ধন। অতঃপর সবজি এবং শশা-টমেটো-গাজর-পেঁয়াজ-সরিষা তেলের সালাদের সাথে ভক্ষন। বেশ খানিকক্ষন আড্ডা। আর তারপর এই এখন লিখছি খানিক খেরোখাতায়।
উফফ। মনে হচ্ছে নিজের সাথে বকর বকর করেই যাচ্ছি অনেকক্ষন ধরে। তবু তো ধরে রাখা হলো আজকের দিনটা। রাতটা বাকি আছে এখনও। সেইটুকু থাকুক নিজের কাছেই।
কেউ যদি পড়ে থাকে এই সাধারণ দিনলিপি তাকে জানাই নতুন বছরের শুভেচ্ছা। ভালো কাটুক, ভালো থাকুক সবাই। ভালো থাকুক আমাদের সোনার দেশটা, নতুন সম্ভাবনাকে সংগী করে বাস্তব সাফল্যের পথে।
Comments
কিন্তু যারা সংসারধর্মকেই সবার থেকে বড় করে দেখেছেন, তাদের ছোট করে দেখি না কখনও। একেকটা মানুষের পয়েন্ট অব ভিউ একেক রকম। একেক জনের সুযোগও ভিন্ন। এইসব কিছুর ওপরে জানি, আমার মা (এবং আরো অনেকেই) সংসারকেই আকড়ে ধরে যে সুন্দর শৈশব আমাদের দিয়েছেন সেজন্য আজীবন তাকে সবার চেয়ে বড় জানি। অত বড় হবার যোগ্যতা হয়ত আধুনিক মানুষের নেই।
shuvo hok apnar shamner dingulo.