রঙ








নানান কারনে মন খারাপ হয়ে কেমন যেন ধূসর হয়েছিলো সব কিছু। একটার পর একটা দুঃসংবাদ। একটু একটু করে সেই সব কাটিয়ে ওঠার খুব চেষ্টা করে যাচ্ছি। আজ কি ভেবে ব্লগের চেহারাটাও বদলে দিলাম। রঙ্গীন আনন্দময় হোক চারপাশটা, সেই প্রচেষ্টায়।

এর মাঝে ঈদ পার করেছি। এবারের ঈদটা বেশ কেটেছে। দুঃসময়ের মাঝে কেমন যেন একটা আনন্দ-বাতাসের মত। অনেক রান্নাবান্না, খাবারের আয়োজন...তার মাঝে সময় করে এক ফাঁকে হাতটা মেহেদিকে রাঙিয়ে নেয়া, পরিচিত জনদের বাসায় গিয়ে দেখা করা, নিজের বাড়িতে আপ্যায়ন করা- এই সমস্ত কিছুতেই কেটে গেলো বেশ উৎসবের আমেজ নিয়ে। তার মাঝে সারাটা দিনই ঘুরে ফিরে বিদ্যুৎ ঝিলিকের মত পুরনো ঈদের স্মৃতি উঁকি দিয়ে গ্যাছে। মনে পড়েছে ভোরবেলা বাবা নামাজ পড়তে যাবার আগে সালাম করা, তিন বোনের মিলিত আনন্দ, খুব জোরে গান বাজানো, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া, মনে পড়েছে মা'কে, সারাটা দিন কেমন পরিশ্রম করে এটা সেটা রেঁধে আমাদের আনন্দের সময় করে দিতো মা। সময় বদলায়, দায়িত্ব বদল হয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কত কি-ই করতে পারি এখন, কিছু ইচ্ছায়, কিছু অনিচ্ছায়...দায়িত্ব নিতে পারি। কেবল মা-ই কিছু দেখে গেলেন না।

ঈদের পরদিন এবার দারুন একটা জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। টিউলিপ মেলা। টিউলিপ আমার বরাবরের প্রিয় ফুল। মাঠ জুড়ে ধানক্ষেতের মত টিউলিপ ক্ষেত! ব্যাপারটা চিন্তা করতেও অসাধারণ লাগে। কিছু জরুরী কাজে অনেক দেরি হয়ে গেলো পৌঁছুতে। পাঁচটায় ফেস্টিভাল বন্ধ হবে, আমরা পৌঁছুলাম সাড়ে চারটায়। আধঘন্টা বেশি ঘুরতে দিয়েছে অবশ্য কর্তৃপক্ষ, তাই রক্ষে। এত এত রঙ্গীন ফুলের মাঝে দৌড়াদৌড়ি, ঘুরোঘুরি করে মনটা কি ফুরফুরে যে হয়ে উঠেছিলো। ওই সময়টুকু জুড়ে কেবল রঙ গুলোই ঘিরে ছিলো মনটা। ইশ, পুরো জীবনটা যদি এরকম রঙীন হত!

বলে, লিখে এমনকি ছবি তুলেও এই সৌন্দর্য ধরে রাখা যায় না, তবু কিছু ছবি ব্লগে দিয়ে রাখলাম...থাকুক, একটু রঙীন চিহ্ন থাকুক।

Comments

Shakil Mahmood said…
বড় হয়ে গেলে ঈদ মনে হয় এরকম স্মৃতিরই হয়ে যায়... 'রঙ্গীন চিহ্ন' গুলো ভালো লাগলো...
Ahmed Arif said…
আমার মনটাও বিক্ষপ্ত হয়ে আছে কিছুদিন থেকে। মনে হচ্ছে যা করেছি জীবনে সবই ভুল হয়ে গেছে। রাতে দুঃস্বপ্ন দেখি, ঘুমোতে পারি না।
toxoid_toxaemia said…
তোমরাও তাহলে মনবাল্কে গিয়েছিলে আপু ? ছবিগুলো দারুন তুলেছ।
ছোটবেলার মতন আনন্দ আর পাইনে ঈদে। পানসে লাগে খুব। এবারেও ব্যতিক্রম কিছু ছিলনা। বিদেশে তোমার কি প্রথম ঈদ ছিল এটা ? তেমন খারাপ যায়নি সময় বলতেই হচ্ছে !
এনাম, না এটা প্রথম ঈদ ছিলো না। গত বছর আমি আসার পরেই রোজা পেয়েছিলা, কাজেই এটা এখানে আমার তৃতীয় ঈদ। ঈদ গতবারের চাইতে এবার অনেক ভালো গিয়েছে। আর টিউলিপ ফেস্টিভ্যালে গিয়ে সত্যিই মন অনেক ফুরফুরে লেগেছে।

অমিত ভাইয়া, কি হলো আপনার বলুন তো? দুশ্চিন্তা হচ্ছে...

শাকিল, ধন্যবার। আপনার ব্লগের ঠিকানাও পেলাম, ঘুরে আসব মাঝে মাঝেই।
toxoid_toxaemia said…
সব্বোনাশ, আমার নাম তুমি মনে রেখেছ দেখছি !
:-)
এই সব খটোমটো টক্সিড মার্কা নাম ডাকার চাইতে এনাম মনে রাখাটা ভালো না?
Anonymous said…
ছোট বেলার মত ঈদ বড় হলে হয় না।
Shahin said…
আপনার লেখা পড়লেই দেশটার কথা খুব মনে পড়ে! মা’র কথা মনে পড়ে- দুখিনী মা, একা একা কবরে শুয়ে আছে। কিভাবে মা’কে ছাড়াই জীবন কাটিয়ে দিচ্ছি ভাবতেই স্তব্ধ হয়ে যাই।
" কিভাবে মা’কে ছাড়াই জীবন কাটিয়ে দিচ্ছি ভাবতেই স্তব্ধ হয়ে যাই।"....

Popular posts from this blog

হাত বান্দিবো পাও বান্দিবো | শাহ আবদুল করিম

নজমুল আলবাবের " পাতা ঝরার আগের গল্প" - আমার পাঠ প্রতিক্রিয়া বা স্মৃতির চর্বণ

ক্যাফের শহর মেলবোর্ন