Posts

Showing posts from October, 2007

এমনও শুনতে হয় !

"দেশে কোন স্বাধীনতাবিরোধী কখনও ছিলো না, এখনও নেই" -- বলেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ। আফসোস। এই আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। যেখানে "জামায়াতে ইসলামী"ও একটি বিশিষ্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে এখন পরিচিতি পায়। অথচ এই দলটিই একাত্তরে "বাংলাদেশ" নামটিতেই বিশ্বাস করতো না। বাংলাদেশের জন্মলগ্নেই এই দেশের ভ্রূণ নষ্ট করে ফেলতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলো যারা, এমনকি জন্মের পর যেন সেই শিশু দেশটি পূর্ণ বিকশিত হয়ে গড়ে উঠতে না পারে সেজন্য বুদ্ধিজীবীদের পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলেছিলো যারা -- তাদের সম্মিলিত দল জামায়াতে ইসলামী এখন স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে নির্লজ্জ ধৃষ্টতায় নিজেদের দেশপ্রেমিক হিসেবে পরিচয় দেয়। ধর্মভিত্তিক এই দলটি বোধহয় দেশটিকেও ইদানিং একটা ধর্মগোত্র ভেবে বসেছে। তাই নিজেদের খেয়াল-খুশিমত "ফতোয়া" দেয় দেশের ইতিহাস নিয়ে। সর্বশেষ সংযোজন উপরের বক্তব্যটি। আমার অবাক লাগে, এই মুজাহিদ, যে নিজের ১৯৭১ সালে আলবদর বাহিনীর ঢাকা শাখার প্রধান ছিলো, সে কি করে বলে সে নিজেই যুদ্ধাপরাধী নয়?! ধিক্কার দেই এইসব নির্লজ্জ,

আমার জানলা দিয়ে

Image
"আমার জানলা দিয়ে একটুখানি আকাশ দেখা যায়, একটু বর্ষা, একটু গ্রীষ্ম, একটুখানি শীত। সেই একটুখানি চৌকো ছবি আঁকড়ে ধরে রাখি, আমার জানলা দিয়ে আমার পৃথিবী...।" যখন দেশ ছেড়ে আসি, জুন-জুলাইয়ের তুমুল গরম তখন দেশে। আর মেলবোর্ণে পা রাখার পর কনকনে ঠান্ডা বাতাসই যেন বরণ করে নিলো আমাকে। ঠিক দুই মেরুর আবহাওয়াওয়ার বৈপরিত্য। সব কিছুই আমার কাছে খুব বেশি নতুন ছিলো, এখনও। নতুন দেশ, নতুন সংসার (যে সংসারে আমিই কিনা কর্ত্রী!), নতুন বাসা, সেই বাসা নতুন করে গোছানো, সংসারের টুকিটাকি অজস্র নতুন জিনিসপাতি...কত কি নতুনের মাঝে নতুন এক আমি। আমার প্রিয় সংগীটিও এখন নতুন এক ভূমিকায়, সেই ফার্স্ট ইয়ারের ক্যাম্পাস চষে বেড়ানো তারেক-তিথি এখন তিরিং-বিরিং বন্ধুই শুধু নয়, বর-বৌ ও বটে। হি হি , ভাবতেই ফিক করে হাসি চলে আসে মুখে! এতসব নতুনের মাঝে আমার ভূমিকাগুলো মাঝে মাঝেই অবাক করে দিচ্ছে আমাকে। আমি রান্ধি-বাড়ি, এটা আমার মাঝে মাঝে নিজেরই ঠিক বিশ্বাস হতে চায় না। তবু হয়ে যাচ্ছে সব ঠিকঠাকই আসলে। কেমন এক ধরনের চ্যালেঞ্জিং যেন সব। আস্তে আস্তে দেখি, আজীবন যেই ভূমিকায় আমি সবচেয়ে অদক্ষ ছিলাম, সেই রাঁধুনীর ভূমিকার আমি রীতিমতো এক্সপ

ঢাম ঢাম পূজোর স্মৃতি

Image
আমার কিচেনের সিংকের কলটা ঠিকমত বন্ধ হয় না কিছুতেই। পানি পড়তেই থাকে একটানা। খুব জোরে চেপে বন্ধ করার আগে পর্যন্ত নিজস্ব একটা ছন্দে পানি পড়তে থাকে। হঠাৎই এক সময় খেয়াল হলো যে এই শব্দটা ঠিক টিপটিপ নয়। কেমন যেন বরং "ঢাম ঢাম"। একটু খেয়াল করে শুনতেই দেখি কেমন যেন উৎসব উৎসব লাগছে। বুঝলাম কেন শুনছি এতক্ষন ধরে। শব্দটা আসলে ঠিক পূজোর ঢাকের মত! ক্রমাগত পানি পড়ার শব্দের বিরক্তি কেটে গেছে আমার সেদিন থেকেই। এখন যত শুনি কেবল দেশের কথা মনে হয়, মনে হয় পূজোর কথা। ছেলেবেলায় পূজোর উৎসব আর প্রতিমার দেখার তীব্র আগ্রহ থেকে শুরু করে এই মাত্র ক'দিন আগের ইউনিভার্সিটির উৎসবমুখর ক্যাম্পাস, সব কিছু চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ছেলেবেলায় কি ভীষন আকর্ষন ছিলো প্রতিমা দেখার! অত ছোট বয়সে ধর্ম কিছু বুঝতাম না। যেখানে সবাই আনন্দ করতো সেখানেই ছিলো যত আকর্ষন। কাজেই পূজো শুরু হলো তো প্রতিমা দেখতে যেতেই হবে। বিকালবেলা সুন্দর কোন ফ্রক পড়ে আমি রেডি। আম্মু হাসতে হাসতে চুলে পরিপাটি দুইটা বেনী করে চোখে টানা কাজল দিয়ে দিতো। আমি আমার ছোট আপুর (মেজো বোন) হাত ধরে বেরুতাম প্রতিমা দেখতে। আমাদের ভীষন প্রিয় সেই ছোট্ট মফস্বল শহর টাং

স্মৃতির নৌকা বেয়ে

Image
বিকেলবেলাটায় বেশ ঠান্ডা বাতাস পাওয়া যায় বারান্দায় বসলে। গ্রীলের ওপাশে চোখ পেতে দোদুলকে দেখি আমি মুগ্ধ হয়ে। মাঠ নেই খেলার, তবু ভাগ্যিস আবাসিক এলাকা বলে বাসার সামনে এইটুকুনি রাস্তাটা পেয়েছে, যেখানে বড় যান চলে না। সেই সেইটুকুনি রাস্তাতেই কয়েকটা ইট একটার ওপর একটা সাজিয়ে উইকেট বানিয়ে ব্যাটসম্যান সেজে দাঁড়িয়ে গেছে তার সামনে। ২২ গজের তত্ত্ব এইটুকু জায়গায় ওরা মানতে পারে না, তাতে কি? অদূরে দাঁড়িয়েই হুংকার ছাড়ে ভবিস্যৎ মাশরাফি। আমি মুগ্ধ হয়ে ওদের দেখি। চারপাশের যেসব ক্ষুদে ফিল্ডার ছুটোছুটি করছে ওদের দেখি। উইকেটের পেছনের দুধভাত ছেলেটাকেও দেখি। দেখতে দেখতেই কানের ওপরে চাপড় পড়ে। চমকে ওঠে তাকাতেই দেখি ফজলু আর নুরু দাঁড়িয়ে ফ্যাকফ্যাক করে হাসছে। ঠিক বুঝতে পারি না কেন, কিন্তু আমার একটু খটকা লাগে। ভ্যাবলার মত তাকিয়ে থাকি আমি। আবার চাপড়। - ব্যাটা,আমাদের দিকে তাকাইয়া দেখতাছোস কি? আকাশ দ্যাখ, ক্যামন ম্যাঘ করসে দেখছস? এক্ষনি নৌকা নিয়া বাইর হব। উঠ উঠ, সারাদিন বই পইড়া পইড়া ভ্যাবলা ভাবুক হইছস একটা। এবার আমার সম্বিত ফিরে, তাই তো ! আজ দুপুরেও না ইস্কুল থেকে ফেরার পরে এমন কথাই হয়েছিলো? এর মাঝেই ভুলে গেলাম? ফজলু,

...অতঃপর !

Image
... আসলে অজন্তার কোন অলটারনেটিভ ছিলো না। সুতরাং বাধ্য হয়েই...। সমস্ত গন্ডগোলের মূলে ছিলো তার মা। আরে বাবা, মেয়েটা নাহয় ফড়িং হয়ে একটু বেশিই উড়ে বেড়াচ্ছিলো- তা উড়ুক না, এ তো ওড়ারই বয়স। তাই বলে তার পাখা কেটে ফেলার ষড়যন্ত্র ! এ বড্ড বাড়াবাড়ি। অজন্তা যে প্রতিদিন ইউনিভার্সিটি থেকে দেরীতে বাড়িতে ফিরতো সে তো আর এমনি এমনি নয়- কাজ আর ব্যস্ততার চাপে। কে না জানে ইউনিভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারে পড়া আনকোরা জীবনটা কত ব্যস্ততার! কাজের কি আর শেষ আছে- কার্জন হল ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য দেখতে দেখতেই তো কত সময় লেগে যায়।তার ওপর টি.এস.সি. তে "DU" এর পর A থেকে Z লাগিয়ে কত সংগঠন! সবগুলোর সদস্য না হলেই নয়। নতুন বন্ধুদের সাথে জম্পেস আড্ডাটাও কি কম ইম্পর্ট্যান্ট? এর মাঝে ক্যাম্পাসের আশেপাশের দর্শনীয় স্থানে ঘোরাঘুরি। এই সব কিছুর ফাঁকে কাস-প্র্যাকটিকাল তো করতেই হয় (যন্ত্রণা)। সুতরাং এতদিক রক্ষা করে অজন্তা যে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতো সে-ই ঢের। কিন্তু অজন্তার মা এসব বুঝলেন না। মেয়ের ওপর কড়া শাসনের ব্যর্থ চেষ্টা করে তিনি পাকা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন, বেয়াড়া মেয়েটাকে বিয়ে দিতে হবে। অজন্তার মাথায় পুরো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। ম

হৃদয়পাত্র উচ্ছ্বলিয়া

Image
একটানা বেজে চলা টেলিফোনটা ধরতে ইচ্ছা করছেনা কেন জানি। অলস সময়টা রোজকার মত আজ একঘেয়েও মনে হচ্ছে না, বরং সব বাদ দিয়ে অলসতাটাকেই আঁকড়ে বসে থাকতে ভালো লাগছে যেন। টেলিফোনের ওপাশে মেয়েটা নিশ্চয়ই চিন্তায় অধীর হচ্ছে, তা হোক না একদিন--রোজ সেই একই নিয়ম, অফিসে বসে দুপুরের খাবারের ফাঁকে মায়ের খোঁজ--আজ নাহয় সে একটু চিন্তায় পড়ুক। আজ দিনটার শুরুই যে অন্য রকম, আজ ভাঙুক সব নিয়ম। বারান্দার ইজি চেয়ারে গা এলিয়ে আজ বহুদিন পরে বিকালটাকে বড় সুন্দর মনে হলো আমার। বিকালের নরম হলুদ আলো বুঝি সত্যি এত সুন্দর হয়! কতদিন আমি দেখিনি, কতদিন চোখ বুঝে ছিলাম, কত বছর? পাশে রাখা সাদা খামটার দিকে চোখ পড়ে আবার। আজই সকালের ডাকে হাতে এলো। প্রাপকের নাম বরুণা। চমকে উঠেছিলাম, এই নামে আমাকে কেউ ডাকে না আজ কত বছর! ...তারপর...তীব্র আবেগে সংবরনহীন জলোচ্ছ্বাস। না, আজ আর কোন খেদ নেই, কোন অভিযোগ নেই আমার জীবনের কাছে। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে কি অপূর্ব উপহার, কি শান্তি! পূর্ণতা। আজ সেই চিঠি এলো, যার প্রতিক্ষায় দিন গুনেছি আমি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়ে। যে কথার শুণ্যতায় এত বছরের পূর্ণ সংসারে সব থেকেও কিসের এক অপূর্ণতা ঘিরে ছিলো আমাকে

রাঙ দে বাসান্তি - এখন যৌবন যার

Image
"রাঙ দে বাসান্তি"। কিছুদিন আগে দেখা এই মুভিটা খুব বেশী মাথার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে কদিন ধরে...নতুন করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে অনেক পুরনো ভাবনা,তাই মনের তাগিদ থেকেই এই লিখা। দিল্লী ইউনিভার্সিটির এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী , তাদের বন্ধুত্ব , আধুনিক জীবন-যাপন আর হঠাৎ বদলে যাওয়া আদর্শ-এই নিয়ে এগিয়ে গেছে "রাঙ দে বাসান্তি" মুভির কাহিনী। কারান,আসলাম,সুখী,ডিজে,সোনিয়া চমৎকার একটি বন্ধুদল। বন্ধুত্বের উচ্ছ্বলতায় কেটে যাওয়া দিনের মাঝে হঠাৎ করেই বিদেশ থেকে এলো "সু" নামের একটি মেয়ে। উদ্দেশ্য ভগৎ সিং-এর উপরে একটি ডকুমেন্টারি বানানো। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের দু"শ বছর পরে দেশপ্রম যে কতখানি আজব অন্তসারহীন একটা "টার্ম "-এ পরিণত হয়েছে এই প্রজন্মের কাছে ওদের কথাবার্তায় তা স্পষ্ট। পপুলেশান,করাপশান-এই বেপারগুলোয় উর্দ্ধগতি ছাড়া দেশকে নিয়ে গর্ব (!) করার মত আর কিছুই তারা খুঁজে পায় না ! অথচ লিজেন্ড হয়ে ভগৎ সিং টিকে আছে সেই বৃটিশ মেয়েটির কাছে যার পিতামহ স্বয়ং বৃটিশ সরকারের প্রতিনিধি হয়ে তার দায়িত্ব পালন করে গেছেন চাকরীর খাতিরে আর ক্রমাগত অনুশোচনায় পুড়ে তার অভিজ্ঞতা লিখে রেখেছেন ড

মহালয়ার শুভেচ্ছা

Image
সকালে ঘুম ভাঙতেই বার্তা এলো "মহালয়ার শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা নাও"। চোখের সামনে সুচেতা'দির মায়াবতী মুখটা ভেসে উঠলো, শুরু হলো শুভেচ্ছাময় স্নিগ্ধ একটা দিনের। বৃষ্টি বৃষ্টি মেঘলা দিন। দিদির পাঠানো শুভেচ্ছায় বারে বারে চলে যাচ্ছিলাম পূজোর সব আনন্দ-স্মৃতিতে। দিদির মুখ ভাবতে ভাবতে খুব মনে পড়লো মাসীমার কথা। ভীষন মিষ্টি চেহারার আমাদের মাসীমা-- তাঁতের পাড়ওয়ালা শাড়ী, দু'হাতে শাখা আর পলা, সিঁথিতে মোটা করে সিঁদুর আর বেশ বড়সড় একটা টকটকে লালরঙা সিঁদুরের টিপ--এই আমাদের পুরো দস্তুর বাঙালী মাসীমা, আমাদের কেমিস্ট্রি টিচার সুশান্ত স্যারের গিন্নী। স্যারের মেয়ে শিল্পী ছিলো আমাদের বন্ধু। কলেজের সময়টায় প্রতিটা পূজায় মাসীমাকে না জ্বালালে যেন চলতোই না আমাদের বন্ধুদের। এরকম বৃষ্টি দিন উপেক্ষা করে ঠিক হাজির হতাম সুশান্ত স্যারের বাসায়। খটোমটো রসায়ন ক্লাস বাদ দিয়ে তাঁরই বাসায় বসে রস আনয়নের কাজটা আমরা নিজেরাই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে করতাম। খাটের ওপর এলোমেলো বসে উলটাপালটা আড্ডা, একটু পর পর কি কি জানি নানান রকমের তেলে ভাজা মুচমুচে বড়া নিয়ে আসতেন মাসীমা আর আমরা কত তাড়াতাড়ি শেষ করব সেই প্রতিযোগীতায় নামতাম যেন

বোধ

একটু আগে রুমের শেষ জেগে থাকা সদস্য হিসেবে আলো নিভিয়ে বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে পড়েছি। সোজা ঘরের সিলিংয়ে চোখ। এরপর দৃষ্টির ভ্রমণ। ঘরের সাথে লাগোয়া বারান্দার পাশে কৃষ্ণচুড়া গাছ, পূর্ণিমার আলোয় তার কি অপূর্ব ছায়া পড়েছে ঘরের দেয়ালে! আলোছায়ার এই সৌন্দর্য আজ বহু দিন পরে যেন আবার নজরে এলো আমার। আমার বেকার জীবনের অবসান হবে খুব শীঘ্রি, এর'চে শান্তির ভাবনা আর কি হতে পারে আমার জন্য? ঠিক পাশের বেডে বিভোর হয়ে ঘুমুচ্ছে আমার বন্ধু রতন। বাপস, একটা মানুষের ঘুম এত গাঢ় হয়,রতনকে না দেখলে ধারণাই থাকতো না আমার। আটপৌরে জীবনযাত্রার জল-খাবারের মত স্বাভাবিক হয়ে যাওয়া অসংখ্য ইতিহাস আছে আমাদের বন্ধুত্বের, ইউনিভার্সিটির এবং হল-জীবনের এই ৭ বছরে। সবাই বলে রতন-স্বপন মাণিকজোর। আজ এই মাঝ রাতে জরুরী একটা সময়ে কেন সেই ভাবনার আদিখ্যেতা আমাকে বিব্রত করছে বুঝতে পারছি না। অন্ধকারে উঠে বসি আমি নিজের অজান্তে। নাহ, দ্বিধাটা সরাতেই হবে মন থেকে। কিচ্ছু করার নেই, আর কোন উপায় নেই আমার কাছে। ফজলু ভাইকে কথা দিয়েছি, কালকের মধ্যে টাকাটা তার হাতে দিতেই হবে; নইলে এই চাকরীটা পাবার আশাও ছাড়তে হবে আমাকে। রতনের বালিশের নিচে রাখা চাবিটা বের কর

স্টিল দেয়ার ইজ হোপ

Image
ভূমিকম্প এবং যুদ্ধগ্রস্ত ছোট্ট, সুন্দর দ্বীপ সেফালোনিয়া, সেখানকার একমাত্র ডাক্তার এবং তার কন্যা পেলাগিয়া--এদের ঘিরেই সাদামাটা কাহিনীর সিনেমা "ক্যাপ্টেন করেলি'স ম্যান্ডোলিন"। কিন্তু অন্তত একটা দৃশ্যের চিত্রায়ন আর একটা চিঠির কারণে সাদামাটা এই মুভিটা আর সাদামাটা থাকে নি, অন্তত আমার কাছে। পেলাগিয়া প্রথম যৌবনে প্রেমে পড়েছিলো প্রতিবেশী মান্দ্রাজের। তারপর যুদ্ধকালীন সময়ে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া দূরত্বের সময়ে সে বুঝতে পারে মান্দ্রাজের প্রতি তার ভালোবাসার আসলে ততটা জোর নেই যতটা হলে তাকে ভালোবাসা নাম দিয়ে সীমাহীন সময় অপেক্ষা করা যায়। সময় যায়, আবার তার জীবনের চরম প্রতিকূল মুহুর্তে প্রেম আসে-- ক্যাপ্টেন করেলি--মার্চপাস্টের সময়েও যার পিঠের ঝোলায় দুলতে থাকে তার প্রিয় ম্যান্ডোলিন। কিন্তু অপেক্ষা--পেলাগিয়ার নিয়তির সাথে বুঝি একসুরে বাঁধা। আবার দূরত্ব এসে দাঁড়ায় পেলাগিয়া আর ক্যাপ্টেন করেলি'র মাঝে। জীবন চলতে থাকে জীবনের নিয়মে, বৃদ্ধ ডাক্তার বাবা, যুদ্ধে এতিম পাশের বাড়ির ছোট্ট মেয়ে আর বাবার হাসপাতালে মানুষের সেবা--এই নিয়েই বেঁচে থাকে পেলাগিয়া।হঠাৎ একদিন-- একটা মাত্র পার্সেল আবার গতি এনে

মুঠো ভরা আলো

Image
"আমার কাছে সমগ্র দেশটাকেই পরীর দেশ বলিয়া মনে হইতো "। উচ্চমাধ্যমিকের কোন এক শ্রেণীতে প্রথম পড়েছিলাম বিভূতিভূষন বন্দোপাধ্যায়ের লেখা "আরণ্যক"-এর একটা অংশ। সেই থেকে তাঁর জাদুময় লেখনীর ভক্ত হয়ে যাওয়া। বিভূতিভূষনের আশ্চর্য সুন্দর বর্ণনা কেমন যেন আলৌকিক একটা জগতে নিয়ে যায়। তাঁর লেখা পড়তে পড়তেই সব সময় প্রার্থনা করতাম- রূপকথার পরীর দেশ নয়, বাস্তবে যদি কখনও এমন সৌন্দর্যের সামনে দাঁড়াতে পারতাম ! সব সময় ভেবেছি এই চাওয়াটুকু কেবল চাওয়াই হয়ে থাকবে হয়তো, বা তাঁর মত দৃষ্টিশক্তির অভাবে দেখেও বুঝব না। ঈশ্বরের পরম কৃপা, আমার এই দুর্ভাবনা সত্যি হয় নি। আমার দেশের খুব ছোট্ট একটা গন্ডিতে ঘোরাফেরা করা এই আমি একদিন সত্যি হাজির হলাম পরীর রাজ্যে ! ময়মনসিংহ এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির আমাবাগানে । বন্ধুর বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম আরো অনেক বন্ধু মিলে। সারাদিন জার্নি আর খাওয়াদাওয়াতেই কেটে গিয়েছিল সময়, জানতামই না আমার এতদিনের কাংখিত বিস্ময় চুপচাপ বসে আছে সন্ধেবেলার আশায়! অন্য কথায় যাবো না, সেইটুকুই কেবল বলি। .......অন্ধকার চারপাশ। রিক্সা পুরো ইউনিভার্সিটি চককর দিয়ে চারপাশের হলগুলোর মাঝের একটা রা

আবার শুরু হলো

বহু দিন আগে নিজের এই ব্লগ দাঁড় করিয়ে রেখে আমি ঘুমাতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ সেই ঘুম ভাঙার পরে দেখি, প্রায় এক বছর কেটে গেছে! বেচারা ব্লগ তো তেমনই দাঁড়িয়ে আছে একলা একলা। তাই আজকে অল্প একটু সময় খেটেখুটে ওর চেহারাটা একটু ঘঁষে মেজে দিলাম। এবার আশা করি চলতে থাকবে, আমার হাত ধরেই।