Posts

Showing posts from 2008

ক্যা কোঁ ক্যা কোঁ

আহ! অবশেষে মৌলবাদী এবং যুদ্ধাপরাধীদের বাঙালী চুড়ান্ত "না" বলতে শিখেছে। এবারের জাতীয় নির্বাচনে তাদের শোচনীয় পরাজয় এইটুকু আশা দেখাচ্ছে, নতুন প্রজন্ম তাদের ক্ষমা করে নি, করবে না। চিহ্নিত এইসব যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতার আসনে আর তামসা করতে দেখব না। আহা কি শান্তি। মুক্তিযোদ্ধা আলী আমানের পিঠে মারা লাথি এইবার চরম হয়ে গেড়ে বসেছে তাদেরই পিঠে। আহা কি আনন্দ! ক্যা কোঁ, ক্যা কোঁ!

কথোপকথন

সকাল সাড়ে সাতটা। এই সময়ে আমি জেগে বসে আছি এবং লিখছি এটা আমার জন্য মোটামুটি বিরাট কাহিনী। ঘুমটা যে নেই চোখে তা নয়, কিন্তু ঘুমাতে ইচ্ছেও করছে না। থাকি জেগে কিছুক্ষন। ছুটিরই তো দিন, যদি আবার ঘুম পায় তো ঘুমানো যাবে। আজ সাড়ে পাঁচটায়ও একবার ঘুম ভাঙলো। উঠে গিয়ে ফজরের নামাজটাও পড়ে নিলাম, বেশ একটা শান্তি শান্তি লাগছে। কি যেন লিখতে চেয়েছিলাম ভুলে গিয়েছি..... বাসায় একদম একলা থাকতে কেমন যেন আজব লাগে। এই যে তারু এখন কাজে চলে গেলো, আমার ছুটি, কি ভালো হত যদি এখন গল্প করা যেতো। কেমন হতো যদি ছোটআপুর সংগে বসে গল্প করা যেতো। সকালের নাস্তাটা তো তৈরিই থাকতো নিশ্চয়ই টেবিলে। প্লেট হাতে নিয়ে হয়ত টিভির সামনে বসে গুটুর-গুটুর গল্প করতাম দুই বোনে মিলে। বা দৃশ্যটাকে এখনকার সময়ের সাথে মিলিয়েও নেয়া যায়। এখন তো দুজনেই বড় হয়ে গেছি, কেউ একজন হয়ত উঠে গিয়ে দুপুরের খাবারের রান্নাটা চড়াতাম চুলায়। ভাব নিয়ে "কেউ হয়ত" বলার অবশ্য কিছু নেই, এই "কেউ"টা ছোট আপু থাকতে আমি হবার কোন সম্ভাবনা কোনকালেই ছিলো না, নতুন করে হবেও না। কিন্তু এখন হয়ত বা আমি ওকে একটু সাহায্য করতাম, আর কাজের ফাঁকে ফাঁকে গল্প করেই যেতাম। অবশ

ভরসা থাকুক

অবশেষে সুমন চাটুজ্জের একঘেয়ে সুরের কল্যানেই দুম করে কিছু একটা লিখতে বসলাম। নইলে তো রোজকার সেই যেই কে সেই মনের ভেতরে সব লিখে আজীবন ড্রাফট হিসেবে জমা করে রাখা খেরোখাতার ঝুলি। আজ দিদির সাথে টেলিফোনে কথা বলতে গিয়েও ব্যাপারোটা টের পেলাম। দিদি যখন বললেন, "মন খারাপ লাগলে ফোন দিও", আমি হেসে ফেলে বলি, "মনে মনে অনেক ফোন দেয়া হয় দিদি, বাস্তবে হয়ে ওঠে না"। দিদি হাসেন। তক্ষুনি মনে হয়, এমনি করেই আরো কত কি রোজ করব বলে ভেবেও করা হয়ে ওঠে না, কিন্তু আমার মনে মনে সেসব যেন ঠিক ঠিক হতে থাকে। যেমন এই টুকটাক দিনকার খানিক লিখালিখি। এমনি হাবিজাবিসহ বেশ কিছু বিশেষ বিষয় নিয়ে লিখতে চেয়েছি। কাজে যাবার পথে মাথার মধ্যে সেইসব কথা ঘুরপাক খেয়েছে, খুব সুন্দর উচ্চারনে পরিপাটি করে যত্ন নিয়ে আমি নিজের মধ্যে সেইসব কথা বলে গেছি, যেন বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সাক্ষাৎকার দিচ্ছি কারো সামনে বসে। মনে মনে পুরোটা বলা হয়ে গেলে ভাবি, আজ বাড়ি ফিরে এই কথাগুলোই লিখে ফেলি না কেন? কিন্তু মন বেচারা মনে হয়, এতে খুব ক্ষেপে যায়। কেন রে বেটি, সব বলা হয়ে গেলো আমার কাছে, আবার কেন আঙুলে ছোট ছোট বোতাম টিপে সেইসব কথার চর্বি

"আগুনপাখি" পড়েছি বলে

এইমাত্র একটা উপন্যাস পড়ে শেষ করলাম। উপন্যাস নয়, যেন পূর্ণ একটা জীবন-দেশ-ইতিহাসের দলিল। হাসান আজিজুল হক-এর "আগুনপাখি"। বইয়ের পাতা বন্ধ করে দেখি চোখে কেমন পানি আসতে গিয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে, বুকের ভেতরটা গুমড়ে উঠতে গিয়ে শক্ত হয়ে উঠছে, ঠিক তারই মত। সে-- নাম কি তার? পুরো উপন্যাসে কোথাও কি তার নাম এসেছে একবারও? মনে পড়ছে না তো। কিন্তু সেই এই উপন্যাসে প্রধান চরিত্র, তার বয়ানেই সবটা বলা। সেই বয়ান বড় সরল। ঠিক ঠান্ডা জলের মত শান্তিময়। কত কি ঘটে গেলো তার জীবনে। আমি গ্রামে জন্মাইনি। মাঝে সাঝে হঠাৎ বেড়াতে যাওয়া ছাড়া গ্রামের কিছুই জানি না। "আগুনপাখি" পড়েছি বলেই এই গ্রাম্য সরল মহিলার বয়ানে গ্রামীন জীবন এবং তা দেশ-কাল অতিক্রম করে জীবন্ত হয়ে আজ আমার চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেন আমিই মাতৃহারা কৈশোরে ভাই কোলে নিয়ে পার করে দিতাম বেলা। তেমনি দিন পার করতে করতেই একদিন পা দিয়েছিলাম নতুন সংসারে। রূপকথায় শোনা "ফসলভরা ক্ষেত, গোলাভরা ধান, পুকুরভরা মাছ" নিয়ে সমৃদ্ধ ছিলো সেই সংসার। মস্ত বড় বাড়ি, তেমনই বড় সংসার, স্বামী-সন্তান-শাশুড়ী-ননদ-দেওর-ভাসুর-জা আর রাখাল-মানিষ-মুহুরী নিয়ে ভরা। কোথাও কো

এই স্বপ্ন ভেঙে না যায়...

রোজ সকালে এলার্ম দেয়া থাকে, সুন্দর একটা সময়, যেন সব কিছু ঠিকঠাক করে নেয়া যায়। আমার ওঠা হয় না। ন'টার এলার্ম পেরিয়ে দশটা, এগারোটা...। কোনমতে ঘুম ভেঙে ধুমধাম। সেই ঠিকঠাক করে আর কিছুই করা হয়ে ওঠে না। আজও তাই হলো। কিন্তু আজ সকালের ঘুমে স্বপ্ন দেখেছি...দারুণ! দেখি আমি দেশে গিয়েছি। বাবা, ছোট'পু, বড়'পুর সাথে দেখা হলো, ওদের জড়িয়ে ধরে কত গল্প। ধোঁয়া ধোঁয়া স্বপ্ন নয়, একদম যেন টলটলে জলের মত...পরিষ্কার অনুভূতি। তারপর দেখি, সবাই মিলে ঘুরতে গিয়েছি...সাগর পাড়ে। তারপর কেমন যেন স্বপ্নের মাঝেই বুঝতে পারি, এইসব ভালোলাগা সত্যি নয়। আত্মাটা বুঝি উড়ে চলে গিয়েছিলো সাত সাগর পাড়ি দিয়ে আমার আপন দেশে, আর একটু একটু করে যখন সে ফিরে এসে আমার দেহে আবার বসতে থাকে, ঠিক তখনই বুঝতে পারি আমি স্বপ্ন দেখছি। হাঁচড়ে-পাঁচড়ে যতই আমি বাস্তব থেকে স্বপ্নে ফিরে যেতে চাই, বাস্তবতা ততই আরো আষ্টেপৃষ্ঠে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার অস্তিত্ব থেকে সবাইকে দূরে সরিয়ে নেয়... ভেঙে যায় আমার স্বপ্ন। বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে...ভীষন! এখনও বাড়িতেই আছি, নিজের ঘর, নিজের সংসার। অনেক ভালোলাগা, অনেক ভালোবাসা প্রতি মুহুর্তে ঘিরে থাকে। তবুও...কেমন যেন ইচ্

বাদলা দিনে মনে পড়ে

Image
দেশে নাকি খুব বৃষ্টি হচ্ছে ক'দিন ধরে। গরম থেকে আস্তে আস্তে ঠান্ডা পড়ে যাচ্ছে। এই সব খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া প্রকৃতির। তবু দূর থেকে শুনে কেমন যেন অন্য রকম মনে হয়। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। হঠাৎ যখন একটু একটু করে হালকা শীত পড়তো, সেই সময়টার কথা। হঠাৎ একদিন ফ্যান চালানো বন্ধ হয়ে যায়। বারান্দার রোদ্দুরে চেয়ার বা মাদুর পেতে বসে কিছু পড়তে খুব ভালো লাগতে শুরু করে। রাতে ঘুমানোর সময় একটু ভারী কাঁথা গায়ে জড়ানো শুরু হয়ে যায়। কেমন আদুরে, সুন্দর একটা সময়। এটাই তো হেমন্ত, না? ছোটবেলায় খুব ছবি আঁকার ঝোঁক ছিলো। একটা ছবির কথা মনে পড়ছে, গাঁয়ের মেঠো পথে একজন কৃষক মাথায় নতুন ফসলের ঝাঁকা নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, তার পাশে কিছু গাঁয়ের বধু-ঘোমটা পরা, তাদের শাড়ির রঙ খুব উজ্জ্বল করে রাঙাতাম আমি, হয় সবুজ শাড়ি লাল পাড়, নয়ত লাল শাড়ি সবুজ পাড়--এই ছবির মানেই হেমন্ত। লিখতে গিয়ে খুব অবাক হয়ে ভাবছি, তখন এই হেমন্ত'র মর্ম বোঝাটা কত কৌতুহল-উদ্দীপক ছিলো। এবং এরকম সবকিছুই। এখন যেমন খুব জেনে গিয়েছি,অনেক কিছুই। তখন সেই স্বপ্নমাখা, কৌতুহলী মনে সব কিছুই ছিলো নতুন আবিষ্কারের মতন আনন্দদায়ক। এই যে, ফসল তুলে কৃষকের ঘরে ফেরা মানেই হেম

রঙ

Image
নানান কারনে মন খারাপ হয়ে কেমন যেন ধূসর হয়েছিলো সব কিছু। একটার পর একটা দুঃসংবাদ। একটু একটু করে সেই সব কাটিয়ে ওঠার খুব চেষ্টা করে যাচ্ছি। আজ কি ভেবে ব্লগের চেহারাটাও বদলে দিলাম। রঙ্গীন আনন্দময় হোক চারপাশটা, সেই প্রচেষ্টায়। এর মাঝে ঈদ পার করেছি। এবারের ঈদটা বেশ কেটেছে। দুঃসময়ের মাঝে কেমন যেন একটা আনন্দ-বাতাসের মত। অনেক রান্নাবান্না, খাবারের আয়োজন...তার মাঝে সময় করে এক ফাঁকে হাতটা মেহেদিকে রাঙিয়ে নেয়া, পরিচিত জনদের বাসায় গিয়ে দেখা করা, নিজের বাড়িতে আপ্যায়ন করা- এই সমস্ত কিছুতেই কেটে গেলো বেশ উৎসবের আমেজ নিয়ে। তার মাঝে সারাটা দিনই ঘুরে ফিরে বিদ্যুৎ ঝিলিকের মত পুরনো ঈদের স্মৃতি উঁকি দিয়ে গ্যাছে। মনে পড়েছে ভোরবেলা বাবা নামাজ পড়তে যাবার আগে সালাম করা, তিন বোনের মিলিত আনন্দ, খুব জোরে গান বাজানো, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া, মনে পড়েছে মা'কে, সারাটা দিন কেমন পরিশ্রম করে এটা সেটা রেঁধে আমাদের আনন্দের সময় করে দিতো মা। সময় বদলায়, দায়িত্ব বদল হয় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কত কি-ই করতে পারি এখন, কিছু ইচ্ছায়, কিছু অনিচ্ছায়...দায়িত্ব নিতে পারি। কেবল মা-ই কিছু দেখে গেলেন না। ঈদের পরদিন এবার দারুন একটা

জুবায়ের ভাই...সুখে থেকো ভালো থেকো

যে মানুষটিকে নিয়ে লিখতে বসেছি তাকে নিয়েই লিখব ঠিক করে রেখেছিলাম। কিন্তু বিষয়বস্তুটা যে এমন করে বদলে যাবে, কিছুতেই তো বুঝতে পারি নি আগে। এখনও কি বুঝছি? বিশ্বাস করতে পারছি? না জুবায়ের ভাই, তিনটা বিষন্ন দিন পার করে এখনও বিস্ময়ে ভাবছি, সত্যি চলে গেলেন এতটা দূরে? গত তিনটা দিন অসংখ্যবার একটা কিছু লিখব ভেবে শিউরে উঠে দূরে সরে গিয়েছি...এও কি হয়? এই ভীষন প্রাণবন্ত জীবন্ত মানুষটাকে নিয়ে কি করে এমন শোকগাঁথা লিখা যায়? কেন লিখতে হয়? গত মাসে সচলায়তনে তার অসুস্থতার খবর পড়ে আঁতকে উঠেছিলাম, এত প্রিয় মানুষটা এত কষ্ট পাচ্ছে এই ভেবেই কষ্ট হচ্ছিলো। কিন্তু ভীষন বিশ্বাস ছিলো, বেশিদিনের জন্য নয়, জুবায়ের ভাই সুস্থ হয়ে উঠবেন অতি শিঘ্রী। এসেই আনন্দমাখা একটা পোস্ট দেবেন। আমরা সবাই ঝাপিয়ে পড়ে সেই পোস্টে মন্তব্য করে, পাঁচ তারা দিয়ে তাকে স্বাগত জানাবো আর খুব করে বকে দেব মাঝের কয়েকটা দিন আমাদের এরকম দুশ্চিন্তায় রাখার জন্য। সচলায়তনে আমার পরবর্তী পোস্ট হবে জুবায়ের ভাইয়ের সুস্থতা উপলক্ষ্যে আনন্দপোস্ট, কি লিখব সেইসব ভাষাও ঠিক করে রেখেছিলাম। একটা মুহুর্তের জন্যও কি এই ভয়াবহ পরিণতির কথা ভেবেছিলাম? আজকে লিখতে গিয়ে পেছনে ফির

অগাস্ট পেরুলো, বাঁচলাম।

কেমন করে যেন সময় চলে যায়। নিজের ব্লগের দিকে তাকিয়ে দেখি, জুলাই-এর পরে আর কোন লেখা নেই। আমি লেখাতে অনিয়মিতই থাকি ব্লগে, কিন্তু পুরো অগাস্টে কোনই লেখা নেই দেখে অদ্ভুত লাগছে। অন্তত নিজের ব্লগস্পটে তো হাবিজাবি অলেখাগুলো লিখি, কেউ দেখবে না ভেবে, এখানেও কিছু নেই। এই মাসটায় কিছুই কি ঘটে নি লেখার মত? এমনকি নিজের ডায়েরীতেও? ...অগাস্ট মাসটাকে আমার ইচ্ছা করে আমার জীবন থেকেই মুছে দিই। কি আছে অগাস্টে? দুইটা তারিখ অভিশাপের মত কালো অন্ধকার হয়ে থাকে। পনেরো আর তেইশ। পনেরো অগাস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুদিন, পুরো পরিবারসহ। এরচেয়ে কালো কোন অধ্যায় তো আর নেই বাংলাদেশের ইতিহাসে...নির্মলেন্দু গুনের কবিতাটা মনে পড়ে, "আগস্ট শোকের মাস, কাঁদো"। এরপরে আরেকটা তারিখ যোগ হলো ২০০৫-এ, ২১ অগাস্ট। বোমা মারা হলো আওয়ামী নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে। তিনি বেঁচে গেলেন ভাগ্যজোড়ে, হয়তো দুর্ভাগা পুরো পরিবারের অবশিষ্ট সবটুকু আশির্বাদ তাকে আগলে রেখেছিলো। কিন্তু মরতে হলো সেই সভায় আসা সাধারণ কিছু মানুষকে, ইশ, কি ভীষন অনর্থক মৃত্যু! জীবন্মৃত হয়ে আজো বেঁচে আছেন মৃতদের চাইতেও হতভাগ্য আরো ক'জন। লিখ

কি সন্ধানে যাই সেখান আমি...

(গত কয়েক দিনের বিচ্ছিন্ন দিনলিপি) তুমি না থাকলে সকালটা এত মিষ্টি হতো না দুই তিন ধরে একটু সকালে উঠার অভ্যাস করছি। একটু হালকা নাস্তা করি, চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সচলায়তনে লগ-ইন করি, পড়তে থাকি। ফেসবুকে ঢুঁ মেরে হোমপেজে বন্ধুদের আপডেট দেখি। এই-ই ভালো লাগে তবু মাঝে কিছুক্ষণ রান্নাঘরের রঙীন মশলাপাতি আর চাল-ডাল-পেঁয়াজ-রসুন নিয়ে নাড়াচাড়া করতে হয়। ভাবছি, সকালে উঠতে পারাটা দারুণ ব্যাপার। প্রয়োজনের বাইরের কাজগুলো আয়েশী ভঙ্গিতে করে নেবার সময় পাওয়া যায়। দেশ থেকে বই এসেছে অনেকগুলো, অনেক দিন পর নতুন বই হাতে নিলাম- কি যে আনন্দ! "সচলায়তন সংকলন" নিয়ে টুকটাক কিছু অভিযোগ শুনেছিলাম, ফন্ট বেশি ছোট হয়েছে, কাগজের মান তেমন ভালো নয়-এসব। আমার তো মনে হলো আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বইটা হাতে নিয়ে বসে আছি। কি চমৎকার প্রচ্ছদ। ক্ষুদ্র অক্ষরগুলো দেখে ভাবি আহা কি চমৎকার গুটি গুটি হরফে ছাপা । বইমেলা নিয়ে বরাবরই আমার উচ্ছ্বাস অনেক বেশি, এবারেরটা আরো অনেক বেশি আকর্ষণীয় ছিলো, খুব কাছের মানুষদের বই ছাপা হয়েছে বলে। আর এমন কপাল, এবারই প্রথম বইমেলায় থাকতে পারলাম না। তখন থেকেই অপেক্ষায় আছি। কিন্তু "সচলায়তন সংকলন"

"সচলায়তন" নিয়ে উদ্বেগ

সমস্যা কিছু একটা হয়েছে- কি সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই ধোঁয়াশার মাঝে পড়ে মনে হচ্ছে, আমাদের অতি প্রিয় "সচলায়তন" ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে! নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সচলায়তন সাইটের নির্মাতারা যথেষ্ট ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা সাধারন ব্লগার-লেখক-পাঠকরা অস্থির হয়ে আছি, কিন্তু তারা নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলছেন না। কিন্তু এটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে বাংলাদেশ থেকে www.sachalayatan.com সাইটে ঢোকা যাচ্ছে না। মূল সার্ভারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, সেখানে তো কোন সমস্যা নেই! এবং বাংলাদেশ ছাড়া আর অন্য সব দেশ থেকেই সচলায়তনে ব্রাউজ করা যাচ্ছে। কাজেই এটা অবশ্যই সাধারণ টেকনিকাল সমস্যা না। তো? কেন এরকম হচ্ছে বুঝছি না। কেমন গোমট বেঁধে আছে সব। কোন কিছুতে মন বসানো যাচ্ছে না। মনে প্রানে চাইছি যা ভাবছি তা সত্যি না হোক। কিন্তু সেই সম্ভাবনাই যে প্রবল! বাংলাদেশ কোন পথে এগুচ্ছে তাহলে? ইন্টারনেটে বসে মুক্তমনে নিজের কথাগুলো বলাও কি বন্ধ করার পাঁয়তারা চলছে? খুব দ্রুত অবসান ঘটুক এই ধোঁয়াশার। আমাদের ভীষন প্রিয় "সচলায়তন" আগের মত সচল হয়ে উঠুক বাংলাদেশে। ----------------------------------------

কোলের ওপর...:-)

আজব একটা সময় কাটাচ্ছি। না আসলে সময়টা আজব বলা ঠিক হচ্ছে না, সময় তো একই আছে, আমি সামহাউ আজব হয়ে আছি। কারন এখানে লিখব না। তবে অন্য কিছু লিখি। লিখলে এক ধরনের আরাম হয়। এই আরামটা এখন আমার খুব দরকার। আমি মনে হয় ল্যাপটপে বসে জীবনেও লিখি নাই এর আগে, আজকে খুব মজা লাগছে কোলের ওপর জিনিসটা ফেলে লিখতে। এটা তারেকের পুরনো ল্যাপটপটা। নষ্ট হয়েছে ভেবে আরেকটা কেনার বেশ কিছু দিন পরে টের পাওয়া গেলো যে আসলে পুরানটার সমস্যা খুব গুরুতর না, শুধু হার্ডড্রাইভ বদলে দিলেই ঠিক হয়ে যাবে। কিরম লাগে? তাইলে কেন নতুনটা কেনা হলো? এখন আবার খালি খালি আগেরটার জন্য হার্ডড্রাইভ কিনে কি হবে? কিচ্ছু হবে না, তাও আমরা কিনে ফেললাম। এরকম অদরকারী কাজের একটা আলাদা মজা আছে। দুম করেই কেনা হলো। আগের দিন কি ভেবে তারেককে বললাম, "আমাকে একটা হার্ডড্রাইভ কিনে দিবি নাকি পুরান ল্যাপটপটার জন্য"? আমি কিছু চাইলে এই ছেলে বেশ খুশি হয়। একগাল সরল হাসি দিয়ে বললো, "তাই? আচ্ছা দাঁড়া"। পরের দিন তার কাজ চারটা পর্যন্ত, সে ১টার সময় ফোন করে বলে, "ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে একটা সোয়াপ মার্কেট বসেছে চারটা পর্যন্ত। আমি কাজ থেকে আজকে আগে

পারি না

অসংখ্য মানুষ। এই শহরে এত মানুষ একসাথে আমি কখনও দেখি নি। কিছু একটা গড়বড় হয়েছে নিশ্চয়ই। ভাবার সময় নেই, আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে অফিসে পৌঁছুতে হবে। ডানে ঘুরতেই পুলিশ থামায়, যাওয়া যাবে না। আমি অবাক, হাত দিয়ে সামান্য দূরেই দেখিয়ে বলি, "আমার অফিস ওই তো, পাঁচ পা হাঁটলেই"। "না না, যাওয়া যাবে না, অন্য রাস্তায় যাও"। আমি বুদ্ধি করে রাস্তায় অন্য পাশে যাই, না সেদিক দিয়েও রাস্তা বন্ধ। এবার একটু ঘাবড়ে যাই। এই দেশে বেশি দিন হলো আসি নি, সিটির চেনা জায়গা বলতে আমার এই অফিসখানাই। বাসে করে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় নেমে নির্দিষ্ট দু'টি পথ পেরিয়ে আমার অফিস। এর অন্যথা হলেই আর জানি না। ক'জন পুলিশকে জিজ্ঞেস করি, কোন দিক দিয়ে ওখানে যাওয়া যাবে। প্রথম দু'জন ডিউটি নিয়ে ভীষন ব্যস্ত, আমাকে সময় দিতে অপারগতা জানালো। তৃতীয় এবং চতুর্থজন খানিকটা নির্দেশনা দিলো, একই রকম। ভাবলাম পেয়ে যাবো। কিন্তু ভাবলেও আমি জানি, কাজ হবে না- আমি আসলে পারবো না। রাস্তা আমি কখনও ভালো করে চিনি না। একই রাস্তা দিনের পর দিন, এমনকি বছরের পর বছর ক্রমাগত গেলেও ভুল করে ফেলি তবু। ছোটবেলায় বাড়ি থেকে স্কুলের পথ ভুল করেছি কত, অথচ

রাহেলা

--রাহেলা,অজুর পানিটা দিয়ে যাও তো। হঠাত ডাকে সচকিত হন রাহেলা বেগম। জমে যাওয়া পায়ে ধীর গতিতে হেঁটে যান স্বামীর কাছে। অপলক তাকিয়ে থাকেন। ভুলে যান স্বামীর আদেশ। ফের ডাক পড়ে। -- কি দেখো তাকিয়ে, কথা কানে যায় না? সারা দিন কোন ধ্যানে যে থাকো? আমার প্রথম বউ তো এরকম বেয়াদবী আমার সাথে কখনও করে নি। তোমরা আজকালকার মেয়েছেলে ... রাহেলা নিজের অপরাধের মাত্রা বোঝেন। শান্ত গলায় বলেন, -- আজকে শরীলটা ভালো নাই, তাই কাজে ভুল হয়ে যাচ্ছে, কিছু মনে কইরেন না। আমি এক্ষনি পানি আনছি। রাহেলা ওজুর পানি স্বামীর সামনে রাখতেই টান পড়ে হাতে। -- কি করেন? ছাড়েন। এখন না নামাজ পড়বেন! রোমান্টিক হবার চেষ্টা ব্যর্থ হতে দেখে জামাল সাহেব বোঝেন অল্প বয়েসী বউয়ের সাথে কঠিন করে কথা বলাটা ভুল হয়েছে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নামাজে বসেন তিনি। রাহেলা বেগম রান্নাঘরে ঢুকে আবার নিজের চিন্তার জগতে ডুব দেন। আজ তার কি যে হলো ... কেবল পুরনো কথা গুলো এসে ভীড় করছে মনের মধ্যে। চুলায় ভাত ফুটতে থাকে ... রাহেলা বেগম এক নিমিষে "রাহু" হয়ে ভাবতে থাকেন একই সাথে সুখ অথবা দুঃখ স্মৃতি। সুন্দরী রাহেলা। নিজের প্রতি সবার আকর্ষন খুব ভালো করেই টে

২৫শে বৈশাখ

Image
পার্থিব সমস্ত অনুভূতির শেষ ভরসা তিনি একজনই- সকল আশার, সকল নিরাশার, যত ভালোবাসা, যত ঘৃণা, যত ভক্তি, যত শোক, যত উচ্ছ্বাস, যত শান্তি এবং পরিপূর্ণতা। হৃদয়ের সমস্ত বিতর্ক অবশেষে এইখানে এই শান্তিময় মহাপুরুষের কাছে এসে থেমে যেতে বাধ্য। "গীতবিতান"-এর পাতায় পাতায় একে একে সব সমাধান লিখে গেলেন তিনি অবলীলায়। মানুষের গভীরতম আবেগকে পরম যত্নে গেঁথে দিলেন সুরের মালায়। সৃষ্টি হলো অমর এবং চির আধুনিক গান। কত্তো বড় জাদুকর তুমি কবিগুরু, সব জেনে বসে আছো! বাংগালীর আজ বড় সৌভাগ্যময় দিন, ২৫শে বৈশাখ। আমার সামর্থ মাত্র এই ক'টা লাইন। তাই সম্বল করেই তোমায় প্রণতি জানাই গুরু।

বন্ধু

সূর্য ডুবে যাবার অল্প কিছু সময় পর থেকে বারান্দায় এসে বসে আছেন জামাল সাহেব। বয়স বাড়ছে আর প্রতিটা দিনের দৈর্ঘ্য বুঝি বেড়ে যাচ্ছে সমানুপাতিক হারে। অবসর নেবার পর এই সাড়ে তিন বছরে ধীরে ধীরে শরীরটায় কেমন বুড়ো বুড়ো একটা গন্ধ টের পান তিনি। স্ত্রী মনোয়ারা বেগম গত হয়েছেন প্রায় পাঁচ বছর। এখন হাতে থাকা অফুরন্ত সময়ের অধিকাংশই কাটে অলসভাবনা আর বিগত দিনের দেনা-পাওনার হিসেব কষে। আর সময়ের সাথে সাথে সবার থেকে একটু একটু করে আলাদা হয়ে যেতে থাকেন তিনি। জামাল সাহেবের তিন ছেলেমেয়ে। বড় ছেলে আর মেয়ে ইউনিভার্সিটিতে পড়ছে, ছোটটি কলেজে। তিন ছেলেমেয়ে আর জামাল সাহেব ছাড়া এই বাড়িতে শেষ সদস্যটির নাম বাদশা- তাদের বাসার কাজের ছেলে। এক বছর আগে তিনি বাদশাকে পেয়েছিলেন কাঁচা বাজার করার সময়। সাত/ আট বছরের ছেলেটা রোজ তার বাজারের ব্যাগ টেনে দিতো। কাজ শেষে বখশিশ পেয়ে তার মুখ ভরে উঠতো নির্মল হাসিতে। টুকটাক কথায় জানা গিয়েছিলো তিনকূলে তার কেউ নেই, বাজারে ব্যাগ টানার এই কাজ করেই কোনমতে চলে। জামাল সাহেবের বড় মায়া হয়। একদিন কি ভেবে একেবারে বাসায়ই নিয়ে এলেন তাকে। লাল আভা কেটে গিয়ে অন্ধকার গাঢ় হতে শুরু করেছে। একদৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থ

(রূপ)টুপ(কথা)টথা

হেমিংওয়ের বুড়ো সান্টিয়াগো আর সুকুমার রায় বেশ গলাগলি-দোস্তি মুডে আছে আজকে। একটু বসে আড্ডা দেবে ভাবছে কিন্তু তেমন আরামদায়ক, নিরিবিলি জায়গা পাবে কই? একটু খুঁজে টুজে কি ভেবে তারা বসবার জন্য বেছে নিলো আমার মাথাকেই। চুল নামক বিচ্ছিরি কালো কালো আঁশগুলো সরিয়ে একটু বসতে যাবে ওমনি তাদের গাঁয়ে জেকে বসলো একগাদা খুশকি। এহ! দিলো তো গাঁয়ে এলার্জি বাঁধিয়ে...আ ছি ছি ছি বলে তাদের সেকি লাফালাফি। আমার কি আর এসব সহ্য হয়? দু'হাত দিয়ে নিজের মাথায় নিজেই দিলাম বাড়ি। আর ওমনি এই দুই ভদ্রলোক অভদ্রের মত ঢুকে পড়লো একেবারে খুলির ভেতর মগজে! এই সেরেছে! একেবারে মগজে ঢুকে গেলো! তা এসেছেন যখন, নমস্কার নমস্কার, সালাম। আপনারা আমার অতি প্রিয় লোক, ছোটবেলায় কত না হযবরল ভাবনায় আপনারা সংগী হয়েছেন। কত না-মেটানো ইচ্ছা সান্টিয়াগোর মত কল্পনায় ভেবে সাধ মিটিয়েছি। একবার ভেবেছিলাম বড় হলে সান্টিয়াগোর সাগরেদ হয়ে এত্তবড় মাছ ধরব সাগরে। তা এতদিন পরে যখন... "ওরে থাম থাম, অনেক বকেছিস। এবার আমাদের একটু নিজেদের মাঝে গল্প করতে দে। তার আগে বল দিকিনি, ওই যে দেখছিস হাঁস...একটু পরেই ওটা কি হবে?" সুকুমার রায়ের কথায় আমি গর্বিত হেসে বলি

আমার দেখা বাংলা সিনেমা (মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক)

Image
হলে গিয়ে সিনেমা দেখা বন্ধ হবার পরে টিভিই রইলো একমাত্র সম্বল। একটু বুদ্ধি হবার পর থেকেই যে সিনেমাটি টিভিতে সবচেয়ে বেশি দেখেছি তা"জীবন থেকে নেয়া"। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারী-- যেকোন দেশাত্ববোধক উপলক্ষে এই একটি সিনেমাই দেখানো হতো। সম্ভবত রাজনৈতিক জটিলতায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক অন্যান্য যেকোন সিনেমা দেখানোটা ওই সময়ের সরকারের পক্ষে সম্ভব ছিলো না (হায়!)। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই সিনেমাটি যতবারই দেখেছি, নতুন করে ভালো লেগেছে। ছোটবেলায় এই সিনেমার রূপক অর্থটি বুঝিনি, তবুও ভীষন উপভোগ্য মনে হতো। খান আতার সেই চিরদিনের অসম্পূর্ণ গান, " এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে?" কখনোই ভোলার নয়। এবং সেই বিখ্যাত ডায়ালগ, "ঘরে ঘরে দূর্গ গড়তে হবে"...অসাধারণ। একটু বড় হয়ে, একটু বুঝার পর থেকেই কেবল ভাবি, কি পরিমাণ মেধা থাকলে একজন পরিচালক এরকম একটি সিনেমা তৈরি করতে পারেন। কি অসাধারণ প্লট, কি পারফেক্ট রূপক- একটি পরিবারের মধ্য দিয়ে পুরো একটি দেশের সম্পূর্ণ পরিস্থিতিটি তুলে ধরা, সর্বোপরি প্রতিটি পাত্র-পাত্রীর চমৎকার অভিনয়। দেখতে দেখতে মুখস্ত হয়ে যাওয়া এই সিনেমাটি তাই তুমুল উৎসাহ নিয়ে

আমার দেখা বাংলা সিনেমা

Image
ছোটবেলায় ব্যাপারটা ছিলো ঠিক উল্টো। মানে এখন যেমন নাক প্রায় সিঁটকিয়েই বাংলা সিনেমার বড়জোর খবর নেই, ছোটবেলায় বরং প্রবল আকর্ষন ছিলো সিনেমা ব্যাপারটার প্রতি। আর সিনেমা মানেই বাংলা সিনেমা। বিটিভিতে ইংরেজী সিনেমা দেখাতো বটে কিন্তু সেটাকে সিনেমা না ভেবে "মুভি অব দ্য উইক" ভাবাটাই বেশি যৌক্তিক মনে হত সেই সময়! অনেক দিন পর্যন্ত আমাদের বাসায় সাদাকালো টিভি ছিলো। তখন টিভিতে দেখানোও হতো বেশিরভাগ সাদাকালো ছবিই। নায়ক-নায়িকা হয় রাজ্জাক-কবরী-ববিতা নয়ত শাবানা-আলমগীর, কখনও শবনম-রহমান। এর বেশি নিজের মনে নেই, তবে আমার মায়ের খুব পছন্দের ছিলো নায়িকা ছিলো সুজাতা। এক্কেবারে পিচ্চীবেলার সিনেমাগুলো বিটিভিতে দেখাতো বৃহস্পতিবার রাত আটটার সংবাদের পরে। আমরা সবাই সার বেঁধে ড্রইং রুমে বসে যেতাম। দেড় ঘন্টা দেখার পরেই ইংরেজী সংবাদ, মানে আধ ঘন্টার বিরতি। সেই সময়েই ঘটতো করুণ ঘটনা। আমার বাবা আমাকে নানান ভাবে ঘুম পাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করত। একেক দিন একেক অজুহাত, "মা, আজকে তো আর দেখাবে না, পরের অংশের ফিতা নষ্ট হয়ে গেছে", অথবা "আরে এইটা শুক্রবারে সকালে আবার দেখাবে তখন দেখো" ইত্যাদি নানা অজুহাত। সেই সব

বইমেলা...তোমার কাছে যাবো

Image
আমার একটা স্বভাব আছে, কখনও কখনও একটানা একই গান শুনতে থাকি...ঘন্টার পর ঘন্টা। আজ এরকম চলছে, "আমি বৃষ্টি দেখেছি", অঞ্জন দত্তর। শুনতে শুনতে মনটা গানের ভাবের মত হয়ে যায় নাকি আগে থেকেই মনটা তেমন হয়ে আছে বলেই আসলে গানটা শোনা হয়...ঠিক জানা নেই। তবে গান আর মন মিলে অদ্ভুত একটা পরিবেশ তৈরি হয়, তৈরি হয়ে চলতে থাকে। আজ দেশের কথা খুব বেশি মনে পড়ছে। বাবার কথা...। মা'র কথা মনে পড়ে, মা কবি ছিলো না কিন্তু খুব সহজ করে জীবনের দর্শন বলে ফেলতো মাঝে মাঝে। একটা কথা বলতো, "মানুষ কেমন পাখি দেখো, কাল আমি কোথায় ছিলাম আর আজকে কোথায়?" বলে ফিক করে হেসে ফেলতো। এই কথাটা মা তেমন গুরুতর অর্থে যে বলতো না নয়। হয়তো একদিন বেড়াতে গেলাম টাংগাইলে, পরের দিন ঢাকার বাসায় ফিরেছি, তখন। মা'র দৌড় তো ছিলো সেই ঢাকা-টাংগাইল। বইমেলা শুরু হয়ে গেলো। মা'র সেই কথাটা মনে হচ্ছে বারবার...মানুষ কেমন পাখি, মানুষ কেমন পাখি। আট বছর পর এই প্রথম আমি বইমেলায় যাচ্ছি না। পাখি হয়ে উড়ে উড়ে আমি চলে এসেছি এতটা দূরে যেখানে পৌঁছুতে গিয়ে ডানা গেছে কেটে! এখন আর উড়াল দেবার উপায় নেই। কার্জন বা রোকেয়া হল থেকে হেঁটে অথবা পল্লবী থেকে

নিরন্তর

Image
ছায়ারা কিংবা রূপকথা আসে না আর, আসে কেবল নিশিকাব্যর মত ভূতুড়ে অবয়ব। চাঁদের আলো কবেই বিলীন হয়েছে সোডিয়াম লাইটের কাছে ; এবার হলুদ আলোয় রহস্য খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টায় - অবশেষে হাসির কাছাকাছি বেঁকে ওঠে ঠোঁট! তবু শেষ হাসি হাসা হয় না আমার। এবং তোমার। অথবা আমাদের। কিংবা তোমাদের।

আজ পড়ব

অনেক দিন কিছু লেখা হয় না। তার চাইতেও খারাপ যে কিছু পড়াও হয় না। এমনকি নিয়মিত যে ব্লগের পাতায় ঘোরা প্রতিদিনের সকালের নাস্তার মত হয়ে গিয়েছিলো, ইদানিং পড়া হচ্ছে না তা-ও! অদ্ভুত। এবং খুব খারাপ। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের "রচনাসমগ্র ১" নামিয়ে রেখেছি সেলফ থেকে পরশুদিন। প্রথম পাতার প্রথম লাইন থেকে "মনোরম মনোটোনাস" মাথায় আটকে দিয়েছেন প্রিয় ব্লগার (অবশ্যই লেখক বলা উচিৎ ছিলো, কিন্তু পরিচয় তো ব্লগেই) মুহম্মদ জুবায়ের। এই শব্দদু'টোই ঘুরছে এখনও চর্কির মত। আজ এগুবো। আজ অবশ্যই আরো অনেকদূর পড়ব।